উত্তেজনার জেরে ভারতের মসজিদে গুলি: নিহত ৩, পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষ
ভারতের উত্তরপ্রদেশের সামভালে মুঘল আমলের একটি ঐতিহাসিক জামে মসজিদ নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। হিন্দুত্ববাদী একটি গোষ্ঠী দাবি করেছে, মসজিদটি একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের স্থানে তৈরি। এই দাবির ভিত্তিতে তারা আদালতের দ্বারস্থ হলে, আদালত মসজিদটি জরিপের নির্দেশ দেয়।
রোববার সকালে জরিপকারী একটি দল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করলে মুসল্লিদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ঘটনাস্থলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি পোড়ানোর জেরে পুলিশ ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করে। পুলিশের গুলিতে নিহত হন নাঈম, বিলাল ও নোমান নামে তিন মুসলিম। এছাড়া অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন এবং নারীসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জরিপকাজের ঘটনাপ্রবাহ:
পুলিশের তথ্যানুসারে, ‘অ্যাডভোকেট কমিশনার’-এর নেতৃত্বে একটি দল মসজিদে জরিপ চালানোর জন্য রোববার সকালে উপস্থিত হয়। এ সময় প্রায় এক হাজার মানুষ সেখানে জমায়েত হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। তবে সংঘর্ষের ফলে পুলিশের সুপারিনটেনডেন্টের গানারসহ ৩০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
জরিপকারী দল মসজিদের বিভিন্ন স্থান থেকে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিয়ে গেছে এবং আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
পেছনের অভিযোগ:
হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর দাবি, মুঘল সম্রাট বাবরের আমলে ১৫২৯ সালে একটি মন্দির ভেঙে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। সমালোচকদের মতে, এই জরিপের নির্দেশ ভারতের ১৯৯১ সালের উপাসনা আইনের লঙ্ঘন। এ আইনে ধর্মীয় স্থাপনার অবস্থা অপরিবর্তিত রাখার কথা বলা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
স্থানীয় রাজনীতিবিদদের অভিযোগ, বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা তৈরি করছে। এটি মূলত রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে একটি সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ।
তিন মুসলিমের হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক সংঘর্ষ, এবং মসজিদে জরিপের মাধ্যমে ভারতের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।