শীতের আগে আলুর দাম বেড়েছে, সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ভোক্তা বিপাকে
বাজারে আলুর সরবরাহ পর্যাপ্ত হলেও খুচরা পর্যায়ে দামের ঊর্ধ্বগতি থামছে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে আলু আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হলেও ভোক্তারা এর সুফল পাচ্ছেন না। ভারত থেকে ২১ টাকা কেজি দরে আমদানি করা আলু সিন্ডিকেটের কারসাজিতে খুচরা পর্যায়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে ভোক্তারা পড়ছেন বাড়তি চাপের মুখে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, আমদানিকৃত আলুর খরচ ও পরিবহনসহ খুচরা পর্যায়ে ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। তবে আমদানিকারক ও শ্যামবাজারের আড়তদারদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই আলু আড়ত পর্যায়ে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে খুচরা বাজারে আলুর দাম ৭৫-৮০ টাকায় ঠেকেছে।
পুরনো আলুতে নতুন কারসাজি
কোল্ড স্টোরেজে মজুত থাকা পুরনো আলু ৩৫-৪০ টাকার পরিবর্তে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। সেই আলু খুচরা পর্যায়ে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন বলছে, কিছু ব্যবসায়ী মজুত করে দাম বাড়িয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন।
ভোক্তাদের অসহনীয় অভিজ্ঞতা
নয়াবাজারে আলু কিনতে আসা আমেনা বেগম বলেন, “এক কেজি আলু ৭৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আগে শীতের আগে দাম কমত। এবার তো উল্টো চিত্র।”
সিন্ডিকেট ভাঙার চ্যালেঞ্জ
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, “সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের অক্ষমতা স্পষ্ট। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় কিছুদিন দাম কমলেও, ফের সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়েছে।”
সরকারি অভিযান
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল জানান, “২১ টাকায় কেনা আলু ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গেছে। সিন্ডিকেট ভেঙে আলুর দাম সহনীয় করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।”
অন্যান্য পণ্যের পরিস্থিতি
পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও এখনো দেশি পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ ১৪০-১৬০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা এবং লাউ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা এবং ডিম প্রতি ডজন ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।