লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি: কী হতে পারে শর্তসমূহ?
লেবাননে আসন্ন যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরাইল। বৃহস্পতিবার এক ঊর্ধ্বতন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অল্প সময়ের মধ্যেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
মার্কিন সমর্থিত এই চুক্তির মাধ্যমে হিজবুল্লাহ ধীরে ধীরে লিতানি নদীর উত্তরে সরে যাবে। পাশাপাশি লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। টাইমস অব ইসরাইল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এই খবর প্রকাশ করেছে।
মার্কিন বিশেষ দূত আমোস হোচস্টেইন বৃহস্পতিবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ, এবং আইডিএফ চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হ্যালেভির সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠক করেন।
হোচস্টেইন এর আগে লেবাননের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং জানিয়েছেন যে চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।
সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী
সম্ভাব্য চুক্তি অনুযায়ী, লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর পুনঃপ্রতিষ্ঠা রোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। ইসরাইল যদি দেখে যে হিজবুল্লাহ অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করছে, তবে তারা মার্কিন মাধ্যমে লেবাননের সেনাবাহিনীকে অবহিত করবে। যদি লেবাননের সেনাবাহিনী পদক্ষেপ না নেয়, তবে ইসরাইল আত্মরক্ষার স্বার্থে ব্যবস্থা নেবে।
এক কর্মকর্তা জানান, আইডিএফ তাৎক্ষণিক হুমকি প্রতিরোধে স্বাধীনভাবে কাজ করবে। যেমন হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের শনাক্তকরণ, হামলার প্রস্তুতি ব্যর্থ করা, বা অস্ত্র চালান প্রতিরোধ করা।
চুক্তির অধীনে লেবাননের সাধারণ মানুষ দক্ষিণ লেবাননে তাদের গ্রামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে ইসরাইল জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ লেবাননের কোনো ভূমি দখলে রাখার পরিকল্পনা করছে না। বরং যেকোনো হিজবুল্লাহ উপস্থিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতিসংঘের ভূমিকা
যুদ্ধবিরতির পরও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে উপস্থিত থাকবে। তবে ইসরাইল এটিকে হিজবুল্লাহর অপসারণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালনকারী হিসেবে দেখে না।
লেবাননের আপত্তি ও চুক্তি স্বাক্ষরের সময়কাল
লেবাননের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা যুদ্ধবিরতির পরপরই ইসরাইলি সেনাদের দ্রুত প্রত্যাহার দেখতে চায়। এতে লেবাননের সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং বাস্তুচ্যুতদের ঘরে ফেরার প্রক্রিয়া সহজ হবে। অন্যদিকে, ইসরাইল ৬০ দিনের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের কথা বলছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে এবং কয়েক দিনের মধ্যেই এটি স্বাক্ষর হতে পারে। তবে নেতানিয়াহুর মুখপাত্র এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।