জাহাঙ্গীরনগরে আগুন পুড়ে ছাই জীববৈচিত্র্য
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত বন অঞ্চলে ভয়াবহ আগুনে প্রায় ১৫ এক বন পুড়ে গেছে। তবে কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত তা নির্ণয় করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার দুপুর ১২টায় সেখানে আগুন লাগে।
বেলা ২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আড়াই ঘণ্টার এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় পাঁচ একর এলাকার গাছপালা পুড়ে গেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বেলা ১টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আগুনের ভয়াবহতা দেখে ফায়ার সার্ভিসকে জানাই। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের উৎস সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।
এটা দুষ্কৃতকারীদের কাজ অথবা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।’ আড়াই ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে তবে এরমধ্যেই পুড়ে যায় ১৫ একরের বেশি জায়গার গাছপালা। তবে আগুন লাগার ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারই প্রথম নয়। বিগত দুই সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, জহির রায়হান মিলনায়তন–সংলগ্ন পুকুরপাড়, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও বটতলার পেছনের কিছু অংশে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তবে সেসব আগুনের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরে প্রায় সময় এমন আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমরা দেখেছি বিগত বছরগুলোতে শীত শেষে এই ধরনের আগুনের সূত্রপাত হয়। অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ঝোপঝাড় পরিষ্কারের পরিবর্তে তাতে আগুন লাগিয়ে দেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় লকডাউন থাকায় গতকালের ঘটনার সঙ্গে এমন সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরের এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত এ বনাঞ্চলে ঝরা পাতার নিচে টিকটিকি, ব্যাঙ, গিরগিটিসহ নানা ধরনের কীটপতঙ্গ আশ্রয় নেয়।
এ ছাড়া সেখানে বাগডাশ, শিয়াল, বনবিড়াল, গন্ধগোকুল ও মেছো বিড়ালের মতো নিশাচর প্রাণীরাও থাকে। তাই এ ধরনের আগুনে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।