- 0
- 0
সকল নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি

বাংলাদেশের সকল নাগরিককে বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বিনামূল্যে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ডক্টরস প্লাটফর্ম ফর পিপলস হেলথ।
আজ সোমবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. শাকিল আখতার। শাকিল আখতার বলেন, বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে ৮ তারিখে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হওয়ার পর ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বিশ্বব্যাপী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা 'গ্লোবাল হেলথ ইমারজেন্সি' ঘোষণা দেয়।পরবর্তীতে এটিকে অতি মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ সরকার কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রথম থেকে জনগণকে সম্পৃক্ত না করার ফলে এবং সম্পূর্ণ আমলা-ব্যবসায়ী নির্ভর নীতি গ্রহণ করার ফলে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে স্ক্যানিং করা, কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক না করায় দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বিস্তার ঘটে। এতে দেড় শতাধিক চিকিৎসকের মৃত্যু ও ব্যাপক সংখ্যক চিকিৎসক সংক্রমিত হয়।
মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) প্রভৃতি নিয়ে দুর্নীতি, হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের স্বল্পতা, আইসিও স্বল্পতা, ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি, কর্পোরেট ও প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে কোভিড রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় সারা দেশের জনগণের জীবনে এক মহাবিপর্যয় নেমে আসে।
এছাড়া কমিউনিটি পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকার কঠোর লকডাউন না দিয়ে কোন ছুটি ঘোষণা করা তেমন সুফল পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে লকডাউনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাজে যোগদানের ঘোষণাটি ছিল সবচেয়ে বড় বর্বরচিত ঘটনা।
সরকার ভ্যাকসিন ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে এবং জীবন রক্ষায় বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহকে সরকার অগ্রাধিকার ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দিয়ে একে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনিক ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আমদানি জন্য সরকার ভারত সরকারের সাথে জিটুজি চুক্তির না করে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাকে সাথে নিয়ে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করেছে।
অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনিকার ২ ডলার মূল্যের ভ্যাকসিন বেক্সিমকোর মাধ্যমে বাংলাদেশ পাচ্ছে ৫ ডলারে। সাম্প্রতিক সংবাদপত্র ও মিডিয়াতে এই ভ্যাকসিন রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ভারত সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতায় এটা পরিস্কার, সেরাম ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পাওয়া অনিশ্চিত। প্রত্যেক নাগরিকের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের রাখঢাক জনগণ পছন্দ করেনা। জনগণ করোনা ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে কোন মধ্যস্বত্বভোগীর দালাল দেখতে চায় না। কিভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জনগণ করোনা ভ্যাকসিন পেতে পারে সেটা এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের সম্মুখসারির যোদ্ধা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্ন কর্মী, সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিতদের সবার আগে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এছাড়া দেশের প্রত্যেক নাগরিককে বিনামূল্যে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএমএ'র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. রশীদ-ই-মাহবুব প্রমুখ।