- 0
চেতনার ভিসুভিয়াস ! তানিয়া সুলতানা হ্যাপি

জানালায় মাথা রেখে ভাবি
পৃথিবীর শেষতক পর্যন্ত দেখতে চাই।
দেখতে চাই উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু
কিংবা চাঁদের দেশে মানুষ কিভাবে করছে
মানুষের সাথে সংঘাত কিংবা প্রণতি।
একেক সময় কিছু মানুষের উপর ভীষণ রেগে উঠি,
একেক সময় মনে হয় ভেঙ্গে ছুঁড়ে সবকিছু চুরমার করে দেই।
চেতনার ভিসুভিয়াস অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো জ্বালিয়ে দেই।
তবুও কেন জানি আবার করি অপেক্ষা!
একটা পবিত্র সময়ের জন্য অপেক্ষা!
কিছু একটা করে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার করি প্রত্যাশা।
এক জীবনে মানুষের কতো চাওয়া!
শুধু চাই! চাই! আর চাই!
আর এই চাওয়া পাওয়ার অমিলেতে মনে হয়
মরে যাই, মরে যাই।
কি হবে বেঁচে থেকে?
যদি কিছু নাইবা পেলাম পৃথিবীতে।
মুহুর্তেই আবার ভেবে উঠি
কি হবে যদি আমি না থাকি এ পৃথিবীতে?
আর হ্যেঁ, তাই তো!
কি হবে আমি যদি না থাকি এ পৃথিবীতে?
পৃথিবীর এ বিশাল কর্মযজ্ঞে
আমার থাকা না থাকায় কিছু্ কি হবে তাতে?
বুকের মাঝে হাজারো বিষন্নতা নিয়ে ভাবি
বেঁচে থেকেই বরং দেখি না আরো কিছুদিন
ঘোর সন্ধ্যায় পাখিদের মাঝে কেন থাকে
নীড়ে ফেরার তীব্র আকাঙ্খা।
টর্চ হাতে নদীতে-নদীতে, সমুদ্রে-সমুদ্রে
জেলে-মাঝিদের কথোপকথন।
সমুদ্রের বিশাল জলরাশিতে
ডুবে দেখবো মাছেদের সাঁতার সাঁতার খেলা।
পাহাড়ে বসে অমাবশ্যার অন্ধকারে শুনবো
ঝিঁঝি পোকার ডাক।
আজকাল চারিদিকে এতো অস্থিরতা আর কিছু উন্মাদ
মানুষকে দেখে প্রায়শই হিংসায় জ্বলে মরি।
আর ভালোবাসা, চাওয়া-পাওয়ার হিসাব
তো শুধু মানুষই করে, তাই না?
স্নিগ্ধ এক বিকেলে বিজিবি গার্ডেনের পাখিরা এসে বললো
কি হবে তুমি পৃথিবীতে যদি নাহি রইলে?
যাওয়ার আগে পৃথিবীতে অমরত্বের জন্য
কিছু একটা করে যাও নাগো রেখে!
নশ্বর এই পৃথিবীতে মানুষের জন্য না হোক
আমাদের জন্য কিছু একটা করে রেখে যাও তো তুমি!
ভেবে দেখো কিছু একটা করে রেখে গেলে মন্দ হবে না নিশ্চয়।
নিজের সাথে বোঝাপড়া করে ভাবলাম
পাখিদের জন্যে কিছু একটা করে যেতে পারলে
একেবারে মন্দ কাজ হবে না অস্বিত্বের স্বাক্ষর রাখতে।
যারা আমাকে কোনদিন পছন্দ করেনি
এমনকি আমার ঘোরতর শত্রুরাও হয়তো হেসে বলবে
'বেচারা' জীবনে একটা কাজের কাজ করে গেছে।
যার জন্য সে মরেও অমর হইলো পৃথিবীতে।
স্বার্থক হবে তবে বায়ো লেখা
আমি রয়ে যাবো মানুষের মাঝে,পাখিদের ভালোবেসে।
আমার মৃত্যুর পরও আরো কিছু দিন,
বেশ কিছু দিন,যতদিন মানুষ বাঁচবে, ঠিক ততদিন।