- 0
- 0
সোনারগাঁয়ে’র সাংবাদিক রিপনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ও অপপ্রচার

গতকাল মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে নারায়ণগঞ্জ- ৩ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক রিপনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ও অপপ্রচার চালানো হয়।
উক্ত সভায় এক নারী সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার সময় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় পার্টির প্রচার সম্পাদক সহিদ তার মোবাইল মনিটর দেখে ওই নারীকে বলে সাংবাদিক রিপনের নাম বলার জন্য। পরে ওই নারী সাংবাদিক রিপন জমি দখল ও হুমকি দিচ্ছে বলে বক্তব্যে বলেন।
জানা যায়, সোনারগাঁও উপজেলার সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটিউশনের মেইন গেইটের নাম ফলক ভাঙ্গার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের সংবাদ পরিবেশন করায় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার নেতাকর্মীরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সাংবাদিক শওকত ওসমান সরকার রিপনের বিরুদ্ধে মিথ্যা জায়গা দখল ও হুমকি প্রদান সহ অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাংবাদিক রিপন বলেন, যে মহিলা কে দিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে সেই মহিলাকে কখনো দেখেও নাই বা চিনেও না। এই মহিলার সঙ্গে কোনো লেনদেন নেই। তাই প্রশ্নই ওঠে না তার জায়গা দখলে যাওয়ার বা ওই মহিলাকে হুমকি প্রদানের।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাজ হুমকি ধামকি দিয়ে কারো জায়গা জমি দখল করা নয়। সাংবাদিকদের কাজ হচ্ছে জনসমক্ষে সঠিক সংবাদ তুলে ধরা।
উল্লেখ্য জি আর স্কুল এন্ড কলেজ গেইটে স্থাপিত আনোয়ার হোসেনের উদ্বোধনী নামফলক ভেঙে দেয়া হয়েছিল। জাতীয় পার্টির সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার নির্দেশে এই নাম ফলক ভাঙা হয় বলে অভিযোগ উঠে। এই ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এছাড়া জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সোনারগাঁয়ের উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়েছিল। পাশাপাশি সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালিত হয়েছে। সেখানে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু সহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, আমি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ ঈমানী দায়িত্ব বলে মনে করি। জাতীয় পার্টির সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা তাদের বক্তব্যে যা বলেছেন আমি আমার নিউজে তা তুলে ধরেছি। এই নিউজ এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার হয়তো পছন্দ হয়নি, তাই আমার বিরুদ্ধে এক নারীকে দিয়ে হুমকি প্রদানের মিথ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
ভিডিও ফুটেজ দেখা যায়, এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার ঘনিষ্ঠ সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় পার্টির প্রচার সম্পাদক সহিদ নামে এক ব্যক্তি শিখিয়ে দিচ্ছে আর ওই নারী তার বক্তব্যে আমার নাম তুলে ধরেন। প্রমাণ হিসেবে আমার নাম শিখিয়ে দেওয়ার সেই ভিডিও ফুটেজটি সংগ্রহে আছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরলে এখন জীবন হয় বিপন্ন। এটা একটি দেশের জন্য কখনোই ভালো হতে পারে না। কোনো সংবাদ ক্ষমতাবান প্রভাবশালীদের মনের মতো না হলেই সংবাদ কর্মীর বিরুদ্ধে চলে অপপ্রচার। সাংবাদিকদের দেওয়া হয় অপকর্মের আখ্যা। আমার বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার করা হয়েছে তা স্বাধীন সংবাদ প্রকাশে গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের জন্য যে হুমকির ইঙ্গিত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সাংবাদিকতার নৈতিক বোধ থেকে, একজন সাংবাদিক সমাজের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জনগণের সামনে তুলে ধরবে এটাই স্বাভাবিক।
আমি একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মনে করি একজন সাংবাদিক সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে যখন হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হয় তা রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত লজ্জ্বার। কারণ দেশের সরকার ব্যবস্থাপনার চতুর্থ স্তম্ভ হলো সাংবাদিকতা। যার মাধ্যমে সমাজের প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়। তবে সে চতুর্থ স্তম্ভ যখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতাবানদের দ্বারা প্রভাবিত বা নির্যাতিত হয় তখন অন্যায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠে।
সাংবাদিক শওকত ওসমান সরকার রিপন তাছাড়া আরো বলেন, বিরোধী দলীয় (জাতীয় পার্টির) এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদের সংবাদ প্রকাশ করায়, সাংসদ ও তার নেতাকর্মীরা উদ্দেশ্য প্রণীত ভাবে সমাজে আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এই ঘৃণিত কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।