বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ০৩/০২/২০২৫ ১২:০১পি এম

আ'लीগ আমলের ৩০০ কোটি টাকার কাজ বাতিল

আ'लीগ আমলের ৩০০ কোটি টাকার কাজ বাতিল
দেশের বিমান চলাচল খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের কাজ, যেগুলোর প্রায় সবই ছিল দুর্নীতির শিকার। তবে বর্তমানে এসব প্রকল্প বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুমোদিত বেশ কিছু প্রকল্প, যেগুলোর মধ্যে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় নির্ধারিত ছিল, তা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এ প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মঞ্জুর কবীর জানান, তিনি সংস্থায় যোগদানের পরই এসব প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখেছি যে বিগত সরকারের আমলে যেসব প্রকল্প নেয়া হয়েছিল, তার বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয় এবং বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না।”

উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, “শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৭টি মসজিদ থাকার পরও আরেকটি মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়েছিল, যা ছিল পুরোপুরি অযৌক্তিক।” বেবিচক চেয়ারম্যান আরো জানান, তিনি আগের সরকারের মতো বিনা কাজে অর্থ অপচয়ের সিদ্ধান্তে একদম রাজি নন। তিনি জিরো টলারেন্স নীতিতে চলছেন এবং যেকোনো দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

বর্তমানে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার যে প্রকল্প বাতিল করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক ভবন নির্মাণসহ কয়েকটি অপ্রয়োজনীয় স্থাপনার কাজ। এ ছাড়া সিলেট, কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের বিমানবন্দরগুলোর প্রকল্পগুলোও বাতিলের তালিকায় রয়েছে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি বেবিচক কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, এসব প্রকল্পের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো বাজেট বরাদ্দও করা হয়নি। এ ছাড়া, এসব প্রকল্পের জন্য কোনো ফিজিবিলিটি স্টাডি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও জমা দেয়া হয়নি। ফলে, এসব প্রকল্প বাতিল করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দর কেন্দ্রিক ১৪ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ, কুর্মিটোলার ১৪ তলা ভবন এবং তেজগাঁওয়ে নতুন অফিস ভবন নির্মাণের মতো প্রকল্পের কাজও বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের থেকে অনুমোদন না পাওয়ায় কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে, বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঞ্জুর কবীর এই পদক্ষেপে জোর দিয়েছেন, যাতে সংস্থার কার্যক্রম আরও গতিশীল ও দক্ষ হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো বেবিচককে আরও উন্নত করা এবং অপচয় বন্ধ করা। প্রকল্পগুলোর মধ্যে কোনটিই যথার্থ ছিল না, তাই এগুলো বাতিল করা হচ্ছে।”

এ ছাড়া, বেবিচক চিঠিতে উল্লেখ করেছে যে, তাদের বাজেটের আওতায় গত বছর ১০টি বড় নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরুর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে এসব প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

সবশেষে, বেবিচক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্মাণ কাজের জন্য কোনো ফান্ড নির্ধারণ করা না হওয়ায় এবং প্রকল্পগুলোর আইনি অনুমোদন না থাকায়, বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে, সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে এবং যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দর সেবা আরও উন্নত হবে।

এখন দেখার বিষয়, সরকারের পক্ষ থেকে এই বাতিলের প্রস্তাবনায় কী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ