হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের 'আয়না ঘর'
রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের (সাবেক শেরাটন হোটেল) প্রশাসনিক ব্লকের দ্বিতীয় তলায় 'আয়না ঘর' নামে একটি নির্যাতন কক্ষ ছিল বলে অভিযোগ করেছেন চাকরিচ্যুত কর্মচারীরা। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নূরুজ্জামান বলেন, "হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের 'আয়না ঘর' ছিল কর্মচারীদের জন্য একটি বিভীষিকাময় স্থান। সেখানে কর্মচারীদের নির্যাতন করে চাকরি থেকে ইস্তফার চিঠিতে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হতো। অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে ডিবির হাতে তুলে দেওয়া হতো।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন, "যে কর্মচারী ন্যায্য পাওনার দাবি জানাতেন, তার ওপর নেমে আসত নির্যাতনের খড়গ। অনেক কর্মচারী কয়েক মাস ধরে বেতন ভাতা পাননি। হোটেলের এমডি, জিএম, এইচআর ডিরেক্টরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এই নির্যাতনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।"
নূরুজ্জামান জানান, "ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য ছাত্র-সমাজকে সঙ্গে নিয়ে হোটেল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ২৮ আগস্ট আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাকে মারধর করার পরিকল্পনা করে এবং পরে আমাকে খুঁজে না পেয়ে কোনো এক থানায় গিয়ে উপঢৌকন দিয়ে আমাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয়। সেই রাতেই ডিবি আমাকে তুলে নিয়ে যায় এবং রমনা থানার ওসি আমাকে আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। আমি রাজি না হওয়ায় ওসি আমাকে গুম করে রাখেন।"
তিনি আরও বলেন, "ছাত্র-সমাজ এবং সহকর্মীরা পরদিন সকালে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, আমাকে ডিবি তুলে নিয়ে যায়, যা স্বাধীনতার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে। এমনকি রমনা থানার ওসি ছাত্র-সমাজ ও সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং আমার স্ত্রীর সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেন।"
নূরুজ্জামান অভিযোগ করেন, "ডিবি কার্যালয় এবং রমনা থানার ওসি কোন অভিযোগে বা কার নির্দেশে তাকে তুলে নেয়, তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি। সহকর্মীদের ন্যায্য চাপে পরে সন্ধ্যায় তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।"
অভিযোগ প্রসঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। চাকরিচ্যুত কর্মচারীরা তাদের ন্যায্য পাওনা আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।