আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২২/০১/২০২৫ ১১:৩৪এ এম
গোপন কারাগারে শিশুদের বন্দি রাখতেন শেখ হাসিনা, তদন্তে ফাঁস ভয়ংকর তথ্য
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ সব তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তার সরকারের গোপন কারাগারে শিশুদেরও বন্দি রাখা হতো। আরও চমকপ্রদ বিষয় হলো, এসব শিশুদের দেওয়া হতো না মায়ের দুধ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় মা-বাবার ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টির জন্য শিশুদের ব্যবহার করা হতো।
শিশুদের ওপর নিষ্ঠুরতা:
এক জোরপূর্বক গুম তদন্তকারী কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের গোপন কারাগারগুলোতে শত শত বন্দির মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশু ছিল। তাদের মাসের পর মাস মায়ের সঙ্গে বন্দি করে রাখা হতো। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অন্তত ছয়টি শিশু মায়ের সঙ্গে বন্দি ছিল, যাদের মায়ের দুধ পান করতে বাধা দেওয়া হয়।
পলাতক শেখ হাসিনা ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ:
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তার শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শত শত নেতা-কর্মীকে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গর্ভবতী মায়ের নির্মম বন্দিত্ব:
তদন্তে উঠে এসেছে, এক গর্ভবতী নারীকে তার দুই সন্তানসহ আটক রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়। এর ফলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীর ভয়াবহ অভিজ্ঞতা:
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাকে শিশুকালে মায়ের সঙ্গে আটক রাখা হয়েছিল একটি গোপন কারাগারে। তার মা আর কোনোদিন ফিরে আসেননি। আরেক ঘটনায়, এক দম্পতি এবং তাদের সন্তানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাবার ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য শিশুদের মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত করা হয়।
মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন:
শেখ হাসিনার শাসনামলে এই ধরনের ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্ন বলে দাবি করা হলেও তদন্তে এটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই তাদের নির্যাতনকারী বাহিনী ও কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, "এমন ঘটনা ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ওপর বহুমুখী প্রভাব ফেলেছে—গুরুতর মানসিক আঘাত থেকে আইনি এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জ পর্যন্ত।