আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৭/০১/২০২৫ ১১:০৬এ এম
সংবিধান সংস্কারের সুপারিশ: কী বলছে বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্যরা?
সংবিধান সংস্কারের নতুন সুপারিশে ক্ষমতার ভারসাম্যের ইঙ্গিত! বিএনপি-জামায়াতের অবস্থান কী?"
বিস্তারিত নিউজ:
ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বিএনপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত হলেও, তা পুরোপুরি দলগুলোর চাওয়া অনুযায়ী হয়নি। কমিশন প্রস্তাবিত সুপারিশে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদসহ বিভিন্ন কাঠামোগত পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। তবে সংবিধানের মূলনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিএনপির প্রতিক্রিয়া:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, তাদের প্রস্তাব থেকে কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যেমন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনার ব্যবস্থা। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিষয়ে আদালতের রায়ের কারণেই কমিশন এই সুপারিশ করেছে। তিনি বলেন, "বিস্তারিত প্রস্তাব পেলে দলে আলোচনা করে মতামত জানানো হবে।"
জামায়াতের মন্তব্য:
জামায়াতে ইসলামী এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, "এটি চূড়ান্ত কোনো সুপারিশ নয়। সরকার সংলাপের আয়োজন করলে আমরা আমাদের মতামত জানাব।"
অন্যান্য দলের অবস্থান:
ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ পরিবর্তন করে জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ করার প্রস্তাব তারা মেনে নিতে পারছে না। বহুত্ববাদের মতো মূলনীতির প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দলটি। এদিকে, সিপিবি বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি থেকে সরে আসাকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন:
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন কমিশন সম্প্রতি তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে, যেখানে ক্ষমতার ভারসাম্য, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, এবং সাংবিধানিক কাঠামোতে বিভিন্ন পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশিত হলেও, বিস্তারিত এখনও রাজনৈতিক দলগুলো পর্যালোচনা করছে।
বিএনপির অতীত প্রস্তাব:
বিএনপি এর আগে ৬২টি সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা, উচ্চকক্ষ সৃষ্টি, এবং প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।
শেষ কথা:
সংবিধান সংস্কারের এই সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত থাকলেও, সকলেই এটি পর্যালোচনার পর তাদের অবস্থান পরিষ্কার করার কথা বলেছে। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এই সুপারিশগুলো কেমন প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।