Harunur Rashid - (Rajbari)
প্রকাশ ২৪/০৫/২০২৩ ০২:১৮পি এম

মধ্যবিত্ত শ্রেনীর দূর্বিষহ জীবনের শেষ কোথায়?

মধ্যবিত্ত শ্রেনীর দূর্বিষহ জীবনের শেষ কোথায়?
সম্প্রতি প্রাইমারী স্কুলের সহকারি শিক্ষকরা তাদেরকে দশম গ্রেড দেয়ার দাবি নিয়ে জাতিয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।তাদের হাতে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্লেকাড দেখা গেছে।একজনের প্লেকাডে দেখা গেছে য়েখানে লেখা রয়েছে "আমরা শিক্ষক,আমরা কোন দালাল নই" আরেকটি প্লেকাড দেখা গেছে যেখানে লেখা রয়েছে "১৮৩২২ টাকায় ০৬ জনের সংসার চলেনা"?এই দাবীটি কি আরো আগে হওয়া উচিত ছিল না?গত কয়েক বছর ধরেই তো দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উধর্বগতিতে মধ্য ও নিম্ম বৃত্তের খুড়িয়ে খুড়িয়ে সংসার চলছে। প্রশ্ন হলো এখনই কেন?

একজন গার্মেন্টস কর্মীর মাসিক মজুরী কত?নূন্যতম মজুরী ৮৩০০ টাকা।এই গার্মেন্টস কর্মীর যদি তিনজনের একটা ছোট সংসার ধরে নেই তাহলে তার সংসারই বা কিভাবে চলে?যেখানে একজন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের ৬ জনের সসার ১৮৩২২ টাকায় চলেনা সেখানে ৮৩০০ টাকায় একজন গার্মেন্টস কর্মীর সংসার কি চলতে পারে?

গত এক বছর আগের একটা ছোট গল্প বলি।বটি শান দিতে গেলাম রাজবাড়ি শহরের এক কামারের দোকানে।অনেক বয়স্ক লোক এখনো বটিতে শান দিচ্ছেন।কথায় কথায় বললেন অনেক বছর ধরেই তিনি কামারির কাজ করছেন।তখনই সয়াবিনের দাম ২০০ টাকা হয়েছিল।ভদ্রলোক ও সয়াবিনের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এক ধরনের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন।এক পর্যায়ে বললেন যা আয় করি তাতে কোন ভাবে টেনে টুনে সংসার চলে কোন টাকা উদ্বৃত্ত থাকেনা।তো ভদ্রলোক কে প্রশ্ন করলাম।আপনাকে যদি কোন চিকিৎসা নিতে হয় তখন কি করবেন?বললেন কি আর করবো, বিনা চিকিৎসায় চলে যেতে হবে!

আমি আমার লেখার শুরুতেই প্রাইমারী স্কুলের সহকারি শিক্ষকদের দশম গ্রেডের দাবী নিয়ে আন্দোলনের বিষয়ে একটা প্রশ্ন রেখেছি এখনই কেন?যদি গত পাঁচ বছরে ও আপনার ১৮৩২২ টাকায় ৬ জনের সংসার চলে থাকে হঠাৎ এখন কি হলো।নাকি আপনারা এতোদিন ঘুমিয়ে ছিলেন?নাকি আপনাদের এটা মনে হয়েছে যে সামনে নির্বাচন এখনই সময় দাবী আদায় করে নেয়ার। শেখ হাসিনা আবার সরকার গঠন করলে কোনভাবেই মুখ খোলা যাবেনা।যমনটা গত পাঁচ বছরে ও মুখ বন্ধ করে রেখেছেন?শুধু গ্রেড নয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি নিয়ে আপনাদের ও আরো আগেই রাস্তায় নামা উচিত ছিল।

প্রতিদিনই লাপিয়ে লাপিয়ে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি হচ্ছে।গত বৃহস্পতিবারে বাজারে কচুর কেজি ছিল ১৪০ টাকা।এই সপ্তাহে আবারো সয়াবিন ও চিনির দাম বেড়েছে।দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ম মধ্যবিত্তের সংসার যে কিভাবে চলছে তা তারাই জানে দেশের কোন মন্ত্রীর জানার কথা নয়,এ জন্যই মন্ত্রীদের জানার কথা নয় কারন তাদের ভোটের জন্য জনগনের কাছে যেতে হয়না।কোনভাবে নৌকা কিনতে পারলেই হয়। আর এ জন্যই মন্ত্রীর মুখ দিয়ে বের হয় সপ্তাহে তিনদিন মানুষ গরুর মাংশ খেতে পারে।মন্ত্রীর কথা শুধু মন্ত্রীর জন্যই প্রযোজ্য কিন্তু এ দেশের মধ্য ও নিম্ম মধ্যবিত্তের জন্য নয়?

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ