নওগাঁর ১৪ জনসহ সারাদেশের ১১৫৬ জন শিক্ষকের সনদ ভূয়া
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ভূয়া সার্টিফিকেটে চাকরিরত শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ)।
ডিআইএ ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের ২৫ মে পর্যন্ত সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে মোট ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ভূয়া বলে তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১৪ জন সহ রাজশাহী ও রংপুর মিলে মোট ৪৪৩ জন শিক্ষক রয়েছেন যারা জাল সনদে চাকরি করে আসছেন।
নওগাঁর জাল সনদে চাকরি করা শিক্ষকেরা হলেন- নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার গোবরচাঁপাহাট ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মোছাঃ ফাহমিদা সরকার,প্রভাষক শিউলি বিশ্বাস,প্রভাষক মোঃ আনোয়ার হোসেন ও প্রভাষক মোঃ রিয়াজুল ইসলামের সনদ জাল।
এ ছাড়া ও নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার উত্তরা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক পপি রানী, মান্দার চকউলি ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মহসিন হাবিব,রানীনগরের গোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তরিকুল ইসলাম, একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহাবুদ্দিন ও সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান।
নওগাঁ সদরের কুশাডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অবিনাশ চন্দ্র প্রামানিক,নওগাঁ সদরের শিকারপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাজ আহমেদ।কৃষ্ণপুর ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক সহোবুল হক। আত্রাইয়ের চকশিমলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোজাহারুল ইসলাম এবং আত্রাইয়ের সুদরানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে জাল সনদধারী শিক্ষক আছেন ৪৪৩ জন। তাদের মধ্যে স্কুল-কলেজে কর্মরত ৩২৩ জন। মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে আছেন ১২০ জন। ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে জাল সনদে শিক্ষকতা করছেন ৩৬৬ জন। তাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজে কর্মরত ২৫৬ জন, যাদের কাছ থেকে ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ফেরতের সুপারিশ করা হয়েছে। এ দুই বিভাগের মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন ১১০ জন, যারা ৪ কোটি ৩৫ লাখেরও বেশি টাকা জাল সনদে এমপিও বাবদ আত্মসাৎ করেছেন।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) অনুসন্ধানে এসব জাল সনদধারীর তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বেতনের টাকা ফেরত নিতে এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে ডিআইএ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিআইএ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে। ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর বলেন, ডিআইএর পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ডিআইএর প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, যে ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের সনদ জাল বলে পাওয়া গেছে, তাঁদের মধ্যে ৭৯৩ জন এনটিআরসিএর শিক্ষক নিবন্ধনের ভুয়া সনদ দেখিয়েছেন। অন্যদের মধ্যে ২৯৬ জনের কম্পিউটার শিক্ষার সনদ এবং ৬৭ জনের বিএড, গ্রন্থাগার, সাচিবিক বিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের সনদ জাল।