Verified আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৯/০৩/২০২২ ০২:১৭পি এম

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া কী ধরনের সামরিক ভুল করেছে?

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া কী ধরনের সামরিক ভুল করেছে?
বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ এবং সামরিক শক্তিধর দেশ রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনে সামরিক হামলা শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের সেই সক্ষমতা দেখা যাচ্ছে না। পশ্চিমা দেশগুলোর অনেক সামরিক বিশ্লেষক যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের কর্মকাণ্ড দেখে অবাক হয়েছেন। তারা এক কথায় একে হতাশাজনক বলে বর্ণনা করেছেন। এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাশিয়ার সামরিক অভিযান অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। অনেকেই এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যে, যুদ্ধে যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তা কি রাশিয়া কাটিয়ে উঠতে পারবে? একজন জ্যেষ্ঠ ন্যাটো কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, এটা পরিষ্কার যে, রাশিয়া তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি, হয়তো যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত সেটা পারবেও না।

সুতরাং, প্রশ্ন উঠতেই পারে- ইউক্রেনে হামলা করতে গিয়ে রাশিয়া আসলে কী ভুল করেছে? আক্রান্ত হলে ইউক্রেনে কতটা প্রতিরোধ তৈরি হতে পারে, ইউক্রেনের তুলনামূলক ছোট সামরিক বাহিনী কতটা লড়াইয়ে সক্ষম, সেটি ধারণা করতে গিয়ে রাশিয়া প্রথম ভুল করেছে।

প্রতিবছর সামরিক শক্তির পেছনে ছয় হাজার কোটি ডলার ব্যয় করে রাশিয়া, ইউক্রেন যেখানে ব্যয় করে মাত্র ৪০০ কোটি ডলার। রাশিয়াসহ আরও অনেকেই দেশটির সামরিক শক্তিকে অতিরিক্ত বড় করে দেখছিলেন। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর জন্য একটি উচ্চাভিলাষী আধুনিকীকরণ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং তিনি নিজেও হয়তো তার প্রচারণায় বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন।

ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক বাজেটের বড় একটি অংশ চলে গেছে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র এবং সে সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পেছনে। তার মধ্যে রয়েছে হাইপারসনিক মিসাইল তৈরির মতো প্রকল্প। বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক ট্যাঙ্ক টি-১৪ আর্মাটাও তৈরি করেছে রাশিয়া।

তবে মস্কোর রেড স্কয়ারে প্যারেডে সেটি দেখা গেলেও ইউক্রেনের যুদ্ধে দেখা যায়নি। সেখানে রাশিয়া যেসব ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে, তার বেশিরভাগই টি-৭২ ট্যাঙ্ক, আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার, আর্টিলারি এবং রকেট লঞ্চার। যুদ্ধ শুরুর দিকে আকাশে রাশিয়ার পরিষ্কার দখল ছিল। ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর তুলনায় তাদের তিনগুণ বেশি শক্তি দেখা গেছে। অনেক সামরিক বিশ্লেষক ধারণা করেছিলেন, হামলাকারী বাহিনী খুব দ্রুত ইউক্রেনের আকাশে নিজেদের দখল নিয়ে নেবে, কিন্তু তারা সেটা পারেনি। দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এখনো সক্ষম।

মস্কো হয়তো আরও আশা করেছিল যে, তাদের বিশেষ বাহিনী যুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। খুব দ্রুত তারা ফলাফল এনে দেবে। কিন্তু একজন জ্যেষ্ঠ পশ্চিমা সামরিক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, রাশিয়া ভেবেছিল, তারা স্পেৎনাজ আর ভিডিভি প্যারাট্রুপারের মতো হালকা ইউনিট মোতায়েন করে ইউক্রেনের ছোটখাটো প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে দেবে। তাতেই তাদের দখল চলে আসবে।

কিন্তু প্রথম কয়েকদিনে ইউক্রেনের কিয়েভের কাছাকাছি হোস্টোমেল বিমানবন্দরে রাশিয়ার হেলিকপ্টার হামলা ঠেকিয়ে দেয়া হয়েছে। যার ফলে রাশিয়া তাদের পরিকল্পনা মতো সৈন্য, সরঞ্জাম অথবা রসদের সরবরাহ আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ