Manir Ahmed Azad - (Chattogram)
প্রকাশ ১৪/০৩/২০২২ ১১:৩৩পি এম

দুনিয়ার কাজ হোক পরকালের পাথেয়

দুনিয়ার কাজ হোক পরকালের পাথেয়
নবী মুহাম্মদ সাঃ দুনিয়া ও আখেরাত দুটোই দেখে উম্মতদেরকে প্রকৃত ইসলাম শিক্ষা দিয়েছেন। মহান আল্লাহর মনোনীত ধর্মের নাম ইসলাম। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হলেন হযরত মুহাম্মদ সাঃ। একজন স্বাভাবিক মানব শিশুর মতো জন্মগ্রহণ করলেও নবী মুহাম্মদ সাঃ ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী। স্বয়ং আল্লাহ আলাদা বৈশিষ্টে নিরাপত্তা ও জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছিলেন। এ কারণে পৃথিবীর কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি পড়েননি এবং দুনিয়ায় কোন মানব তাঁর শিক্ষক ছিলেন না।

তিনি যা বলেছেন এবং যে কাজ করেছেন তা সম্পূর্ণ আল্লাহর শেখানো জ্ঞান দ্বারা। এ মহা জ্ঞানের সাথে পৃথিবীর কারো সাথে তুলনা হয়না। এ জন্যে মহানবীর কথা ও কাজগুলো এখনও ইসলামী জ্ঞানের ভান্ডার হয়ে রয়েছে। এছাড়া পবিত্র কুরআন আল্লাহর অমিয় বাণী মহানবী সাঃ এর বক্ষ বিদীর্ণ (ছিঁড়ে) করে আল্লাহ ফিট করে দিয়েছিলেন। তিনি উম্মতদেরকে নিজে পড়ে পড়ে জ্ঞান বিলিয়েছেন। আর তিনি জান্নাত, জাহান্নাম, আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে যা কিছু বলেছেন তা স্বয়ং আল্লাহ তাঁকে দেখিয়েছেন এবং দেখে দেখে উম্মতদেরকে বলেছেন।

এ কারণে তিনি দুনিয়া ও আখেরাতের অনেক কিছু বলেছেন। মনে করুন, আপনি টিভিতে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা দেখেছেন। দু’দিন পর কোথাও বেড়াতে গিয়ে ড্রয়িং রুমে বসে অন্য একটি চ্যানেলে একই খেলা দেখছেন। তাহলে আপনি আপনার সাথে বসা টিভি দর্শকদের বলতে পারবেন কোন খেলোয়াড় গোল করবেন এবং কয় গোলে কোন দল জিতবে। কারণ অন্যরা দেখে নাই সেই কারণে অনেক শিক্ষিত হয়েও তারা বলতে পারবে না যা আপনি বলতে পারবেন। আমাদের মহানবী সাঃ কে আল্লাহ দেখিয়েছেন এবং জানিয়েছেন এ কারণে তিনি জান্নাত-জাহান্নাম সম্পর্কে উম্মতকে বলেছেন। এখন তিনি নেই। প্রকৃত হক্কানী আলেমরা নবীজীর উত্তরসূরী। অনুসারীরা কুরআন ও হাদীস পড়ে আল্লাহর নিয়ামতপ্রাপ্ত হতে পারেন।

যা নবী-রাসূল, তাবেঈন, শহীদ ও হক্কানী আলেমগণ প্রাপ্ত হয়ে আল্লাহর সীমাহীন অনুগ্রহ লাভ করেছেন। আমরা কখনো আমাদের সীমিত জ্ঞানে আল্লাহকে দেখতে ও বুঝতে পারি না। মুহাম্মদ সাঃ দুনিয়াবাসীর জন্যে রহমত। আল্লাহ আমাদের রাব্বুল আলামিন। আর নবী মুহাম্মদ সাঃ রহমাতুল্লিল আলামীন। তিনি জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শুধু উম্মতের নাজাতের জন্য কেঁদেছেন। পরকালে একমাত্র উম্মতের নাজাতের জন্যে তিনি সুপারিশকারী হবেন। এমনকি সরাবান তহুরার পাত্র হাতে নিয়ে উম্মতদেরকে পান করাবেন। এ অমিয় সুধা যারা পান করার সৌভাগ্য অর্জন করবেন তারা সকলেই হবেন জান্নাতি। এমন নবীর দেখানো পথই সরল ও সত্য পথ। অন্য কোন পথ ও মত আমাদের অনুসরণীয় নয়। দুনিয়ায় আমরা কেউ বেঁচে থাকবো না।

আমাদের জন্য মৃত্যু অনিবার্য। তাই দুনিয়ার মোহ-মায়া, লোভ-লালসা পরিত্যাগ করে একমাত্র সরল পথে আমাদের জীবন পরিচালিত করতে হবে। রোজ হাশরের দিন কোন রাজনৈতিক নেতা কিংবা আমাদের পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন কেউ আমার কোন উপকার করতে পারবে না। কেউ আমাদের আপনজন নই। একমাত্র আল্লাহ আমাদের আপনজন। আজ আপনার মৃত্যু হলে বাঁশ ঝাড়ের নীচে মাটির কবরে একান্ত আপজনরা রেখে আসবে।

একদিন দুইদিন পর আপনার কথা ভুলে যাবে। দুনিয়ায় আপনি অস্তিত্বহীন হয়ে যাবেন। আপনার রেখে যাওয়া ঘর, সম্পদ আর আপনার বলবে না। ছেলে-মেয়ে স্ত্রীর নামে হয়ে যাবে। এমনকি বউ যদি সুশ্রী বয়স কম হয় তাহলে অন্য একজনকে বিয়েও করতে পারে। তাই কিসের রাজনীতি, কিসের রাজনৈতিক নেতা, কিসের পরিবার-পরিজন। আমার সংকট মূহুর্তে কেউ পাশে থাকবে না। কার জন্যে এই সম্পদ যোগাড় করছেন? অন্ধকার কবরের আজাব, পুলসিরাত, রোজ হাশরের ময়দান কি করে উত্তরণ হবেন সেই ভাবনায় ডুবে থাকুন। মৃত্যু আমাদের ঘিরে রেখেছে, পালাবার কারো সুযোগ নেই। সময় থাকতে ফিরে আসুন আল্লাহর পথে, রাসূলের পথে। নেক আমলের তালাশ করুন।

দেশের প্রচলিত কওমী, সুন্নী, চরমোনাই, উজানী, তাবলীগ, জামায়ত কোন পন্থীই আমাদের কোন ধর্ম নই। ইসলাম আমাদের ধর্ম। এক আল্লাহ, এক সর্বশেষ নবী ও এক কিতাবের অনুসারী হয়ে জীবনকে পরিচালিত করুন। ধর্মের অবশ্যকীয় পালনীয়গুলো সকল পন্থীদের কাছে অভিন্ন। টুনকো জিনিসগুলো নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি না করে চলুন। তাহলে আমরা মুসলমান জাতি সত্যিকারের শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী হতে পারবো। আমাদের একটি পরিচয়-আমরা সকলেই ইসলাম ধর্মের অনুসারী। আমরা মুসলমান জাতি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ

ROMANA ISLAM - (Comilla)
প্রকাশ ২৪/০৫/২০২৩ ০২:১৯পি এম