Harunur Rashid - (Rajbari)
প্রকাশ ১১/০৩/২০২২ ০৭:২৯পি এম

নিম্ম ও মধ্যবিত্ত কি আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে?

নিম্ম ও মধ্যবিত্ত কি আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে?
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভূমিধস বিজয় হয়েছিল এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র বিতর্ক মুক্ত সাধারন নির্বাচন ছিল সেটি।সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভূমিধস বিজয় যতটা না তাদের সফলতা ছিল তার চেয়ে বেশী ব্যর্থতা ছিল পূর্বাপর বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের দেশ পরিচালনায় ব্যাপক ব্যর্থতা।দেশের মানুষ বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে ২০০৮ সালের জাতিয় নির্বাচনে।গত তের বছরে সমুদ্রের ঝড়ের গতির মতো আওয়ামী লীগের সমর্থন বেড়েছে বলে মনে করা হয়।দেশে এখন সবাই আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালের নির্বাচনে যে তরুনদের বিএনপির মিছিল করতে দেখেছি গত তের বছরে তাদের বেশীর ভাগই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদ পদবী পর্যন্ত পেয়েছেন।

গত তের বছরে আওয়ামী লীগের কোন নেতা অথবা কোন কর্মীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে ও তাদের রাজাকার বা তাদের আত্নীয় স্বজনের তকমা দেয়া হয়।এক এগারোর সময় আমরা শুধুমাত্র মনে করেছিলাম দেশের টাকা বিদেশে একমাত্র তারেক রহমান ই পাচার করেছেন।তাই তাকে শুধু চোর নয় একরকম জাতিয় চোর উপাধি দেয়া হয়েছে।কিন্তু গত তের বছরে ও কি তারেক রহমানই বিদেশে টাকা পাচার করেছেন?বিদেশে টাকা পাচারের যদি খতিয়ান দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে গত তের বছরে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমান টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বাংলাদেশ স্বাধীনের ৫০ বছরের বাকী ৩৭ বছরে তার এক গুন টাকা ও বিদেশে পাচার হয়নি।তারেক রহমানের ২০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে এক মোহতেশাম হোসেন বাবর পাচার করেছেন ২০০০ কোটি টাকা?এই বাবর হলেন শেখ হাসিনার একমাত্র মেয়ের শ্বশুরের আপন ভাই?শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান আর আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কথোপকথনের যে অডিও আমরা শুনতে পেয়েছি তাতে বুঝার বাকী থাকেনা যে কি পরিমান টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে আর আমাদের ভ্যাট ট্যাক্স বছরে বছরে বাড়ানো হচ্ছে এক উন্নয়নের দোহাই দিয়ে।

দেশের নিম্ম বিত্তের পাশাপাশি এখন মধ্যবিত্ত ও নাকানি চুবানি খাচ্ছে।দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্ধগতি মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।একদিকে গণপরিবহনে চলছে নৈরাজ্য অন্যদিকে বাজরে চলছে তেলেসমাতি। একজন মন্ত্রী তো বলেই ফেললেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নাকি চারগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।একজন শ্রমিক নাকি তার একদিনের আয় দিয়ে ২০ কেজি চাল কিনতে পারেন?৫০ টাকার নিচে বাজারে কোন চাল নেই ২০ কেজি মোটা চাল কিনতে লাগে ১০০০ টাকা। আর একজন শ্রমিক দশ হাজার টাকা বেতনে চাকুরী করলে তার একদিনের আয় কতো হবে মনে হচ্ছে অংকটি সবাই জানলে ও মন্ত্রী মহোদয় জানেন না?কিন্তু মন্ত্রী মহোদয় ও জানেন তারপরেও গলাবাজি করছেন।দেশ জুড়ে নিম্ম ও মধ্যবিত্তের এ নিরব হাহাকারের কথা এখন আওয়ামী লীগের কাছে তিক্তই মনে হবে।গত দুই বছরের বিভিন্ন কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে নাটাই এখন আর কার্যত শেখ হাসিনার হতে নেই।দেশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে।গার্মেন্টস শিল্প সিন্ডিকেট,ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট,আমলা সিন্ডিকেট,ও প্রশাসনিক সিন্ডিকেট। আর নিরাপদে গনভবনে বসে থাকার বিপরীতে এসব সিন্ডিকেট ভাঙ্গার ক্ষমতা ও শেখ হাসিনার নেই!তাই দেশের কোন সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ ও সরকার করতে পারছেনা।কারন দেশের রাজনীতি এখন আর রাজনৈতিকদের হাতে নেই?২০১৪ ও ২০১৮ সালের সরকারের ধারাবাহিকতায় দেশে কখনোই একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়,দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে একটি সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই পারে একটি পরিবর্তন ঘটাতে।একটি বড় প্রশ্ন হলো গত তের বছরের সীমাহীন দূর্ণীতি অনিয়মের পরে ও কি একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হলে দেশের নিম্ম ও মধ্যবিত্ত আওয়ামী লীগ কে ফের সমর্থন দিবে?নাকি নিম্ম ও মধ্যবিত্ত কি আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে?

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ