নবাবগঞ্জ শাল পাতা সংগ্রহে রাখছেন এলাকার মানুষ
দিনাজপুরের চরকাই সামাজিক বন বিভাগের নবাবগঞ্জ শালবনে শুকনো পাতা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে কয়েক শতাধিক মানুষ। উত্তর বঙ্গের সবচেয়ে বড় ৫১৭.৬১ হেক্টর আয়তনের এই শালবন। প্রতি বছর ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে বিশাল এই বনের শাল গাছগুলো থেকে পাতা ঝড়ে পড়লে সেই পাতা কুড়িয়ে তা বাজারজাত করে শত শত মানুষ জীবীকা নির্বাহ করছে।
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের শুরু থেকেই এ বনের শাল, সেগুন, আকাশমনি গাছসহ অন্যান্য গাছের শুকনো পাতা ঝড়ে পড়তে শুরু করে। শুকনো পাতাগুলো সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে নিজেদের দৈনন্দিন রান্নার কাজসহ আশপাশে এমনকি বাজারজাত করে জীবীকা নির্বাহ করে ওই এলাকার সুরেশ ও কাকলীসহ নাম না জানা অনেকে। ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে অনেকের এই ঝড়ে পরা শালপাতা। যে যত বেশি সংগ্রহ করতে পারে তার আয় তত বেশি হয়। আবার অনেকে এই পাতা সংগ্রহ করে জমিয়ে রেখে তা বৈশাখ মাসের দিকে বাজারজাত করলে এখনকার বাজার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি হয়।
জানা গেছে নবাবগঞ্জ বনবিটের জগন্নাথপুর, হরিল্যাখুর, বড় জালালপুর, আলোকধুতি, তর্পনঘাট, রসুলপুর ও খটখটিয়া কৃষ্টপুর মৌজা নিয়ে উদ্যান গঠিত। এই জাতীয় উদ্যান আসলে একটি শালবন। স্থানীয়ভাবে পঞ্চবটীর বন নামেও পরিচিত।২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর নবাবগঞ্জ বনবিটের এই অঞ্চলকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আয়তন ৫১৭ দশমিক ৬১ হেক্টর বা ১২৭৮ দশমিক ৫০ একর।
পাতা সংগ্রহকারীরা জানান, প্রতিদিন একজন ১০ থেকে ১৫ বস্তা পাতা সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি বস্তা পাতা এলাকায় ৪০ টাকা হারে বিক্রি হয়। যা থেকে ৪০০ থেকে প্রায় ৭০০ টাকা আয় করা সম্ভব হয়। আর যাদের ভ্যানগাড়ী কিংবা অন্য কোন বাহন আছে তারা এই পাতার বস্তাগুলো বাজারে নিয়ে গিয়ে প্রতি বস্তা ৫০/৬০ টাকা দরে বিক্রি করেন। তাদের ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি আয় হয়। আবার এই পাতাগুলো সংগ্রহ করে জমিয়ে রেখে বৈশাখ মাসে একটু বৃষ্টি শুরুর পর বিক্রি করলে দাম আরো বেশি পাওয়া যায়্ বাজারে তখন শুকনো পাতার চাহিদাও বেড়ে যায়। আলোকধুতী গ্রামের কাকলীর জানায়, প্রায় দুই যুগ ধরে তারা এই শুকনো পাতা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এই বিশাল শালবনটি আমাদের এই এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য ফাল্গুন চৈত্র মাসে আর্শিবাদ হয়ে দেখা দেয়।