নওগাঁর বদলগাছীতে বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম
নওগাঁ জেলার বদলগাছীতে পাড়া মহল্লায় গড়ে ওঠেছে কিশোর গ্রুপ। নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে কিশোর গ্রুপ। একে অপরের ক্ষমতা দেখাতে কয়েকজন মিলে পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন নামে গ্রুপ গড়ে তুলছে।
আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে অভিভাবকসহ সাধারন জনগন। আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব,মাদক,প্রেম নিয়ে বিরোধের জেরে তারা অহরহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। অর্থের বিনিময়ে যে কারও উপর আক্রমন চালাচ্ছে উঠতি বয়সের ছেলেরা। এমন কি অর্থের বিনিময়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ছে তারা। কিশোর গ্রুপের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এলাকার বড় ভাইরা এতে সমর্থন দেয়।
জানা গেছে গত ৩ মার্চ,২০২২ বৃহস্পতিবার বদলগাছী ফায়ার সার্ভিস থেকে ১০০ মিটার পশ্চিমে মাতাজি- বদলগাছী মহাসড়কে রাত আট টায় মোটর সাইকেলের হাই লাইট দেওয়া কে কেন্দ্র করে পাপ্পু এবং সামস কিশোর গ্রুপের সাথে রাজু নামে এক ইলেকট্রনিক মিস্ত্রীর বাকবিতন্ডা হয়।
এর সুত্র ধরে ৪ মার্চ শুক্রবার সকাল ১১ টায় বদলগাছী চারমাথা বাজারের ঝলক ইলেকট্রনিক দোকানদার মতিনের কাছ থেকে রাজুর মোবাইল নং সংগ্রহ করে পরিচয় গোপন করে জুয়েল বাড়ির ইলেকট্রনিক কাজ করার জন্য রাজু এবং তার হেলপার শান্ত কে বদলগাছী ডাক বাংলোর রাস্তায় আসতে বলে। রাজু এবং তার হেলপার উপস্থিত হওয়া মাত্র জুয়েল পাপ্পু,সুমন সহ অঙ্গাত ১১/১২জন কিশোর কিল ঘুসি মারতে মারতে নদীর বাঁধের নিচে নিয়ে গিয়ে গলায় চাকু ধরে রাজুর কাছ থেকে নগদ পনের হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রাজু বাদি হয়ে বদলগাছী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।
ব্যবসায়ী মো তৌহিদুল ইসলাম বলেন,গত ১৫/২০ দিন আগে আমি মোটর সাইকেল নিয়ে বাজারের কাজ শেষে বাসায় আসতেছি,মন্দির রাস্তা দখল করে ৪/৫ জন কিশোর মোবাইলে পাবজি খেলছে। হর্ণ দিলে গালাগালি করতে করতে আমার দিকে তেড়ে আসে। সিএনজি ষ্টান্ডের লোকজন আগাইয়া আসলে কিশোর গ্রুপ চলে যায়।
তার কিছুক্ষণ পরে দল ভারি করে আমাকে মারার জন্য আমার বাড়ির দিকে আসে। পরে পুলিশ কিশোর গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ করে।
সচেতন মহল বলছেন,তারা সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত দলবল নিয়ে বদলগাছী লাবণ্য প্রভা হাইস্কুল গেইট,রিভার সিটি পার্ক, নদীর নতুন বালুচরজুড়ে তাদের সঙ্গবদ্ধ সারি চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যা হতেই শুরু হয় তাদের গাঁজা ইয়াবা ও সিগারেটের আসর।
মুলত পাবজি এবং নেশার টাকার জন্য তারা ছিনতাই মারামারির মতো জঘন্য কাজ করছে। প্রশাসনের নজরদারি এবং সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের এখনি প্রতিহত করা দরকার। তাছাড়া দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম অন্ধকার।
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি অভিযান পরিচালনা করবো। আপনারা সাথে থাকবেন। বদলগাছী থানায় কোন কিশোর গ্রুপ থাকবে না। পিছনে বড় ভাই থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা নিবার্হী অফিসার আলপনা ইয়াছমিন বলেন, কোথায় কোথায় তারা অপকর্ম করছে। আমি নিজে আজকে অভিযান পরিচালনা করবো। ওসি সাহেব কে বলে দিব আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।আমরা চাই তারা মানুষ হোক।যারা তাদের ব্যবহার করছে তাদেরকে ও আইনের আওতায় আনা হবে।