ত্বকি হত্যার ৮ বছর পরেও বিচার পাইনি তার পরিবার
মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণ করা হয়। দুই দিন পর শীতলক্ষ্যার পাড় থেকে পাওয়া যায় ত্বকীর লাশ। পুলিশের তদন্ত যখন থেমে যায়। তখন উচ্চ আদালতের নির্দেশে RAB’র উপর তদন্তভার দেয়া হয়।
২০১৩ সালের জুলাই এবং নভেম্বরে দুইজনের দেয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বর্ণনা অনুযায়ী। অপহরণের রাতেই তারা তৎকালীন সাংসদ নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে নিয়ে ত্বকীকে পিটিয়ে অজ্ঞান করে। পরে বুকের ওপর উঠে গলা চেপে শ্বাস রোধ করে ত্বকীর মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে আজমেরী ওসমানের গাড়িতে করেই তারা ত্বকীর লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। লাশ নৌকায় করে নিয়ে নদীতে ফেলে দেয়।
এরপর RAB আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে অভিযান চালায়। সেখানে তারা দেয়ালে ও আসবাবে গুলির চিহ্ন দেখতে পায়। সেখান থেকে রক্তমাখা প্যান্ট, দড়ি, রক্তমাখা গজারির লাঠি, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি, পিস্তলের অংশসহ বিভিন্ন বস্তু আলামত হিসেবে সংগ্রহ করে।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ। RAB সংবাদ সম্মেলন করে জানায়। আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। RAB জানায় তদন্ত শেষ। প্রতিবেদন তেরী। অচিরেই তা আদালতে পেশ করা হবে। একটি অভিযোগপত্র RAB তখন সাংবাদিকদের সরবরাহ করে। যা পরদিন জাতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।
কিন্তু এর তিন মাস পর। ৩ জুন ২০১৪। সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওসমান পরিবারকে দেখাশোনা করবেন তিনি। এর পরেই নাটকীয়ভাবে ত্বকী হত্যার বিচারের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তৈরি করে রাখা সেই অভিযোগপত্র আজ পর্যন্ত আদালতে আর পেশ করা হয়নি। অভিযুক্তরা কেউ বিদেশে পালিয়ে গেছে। কেউবা দেশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ত্বকী হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার যে কারো নেই। তৈরি করে রাখা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করার সাহস যে কারো নেই। কারন প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে ওসমান পরিবারকে রক্ষার দায়িত্ব যে নিয়েছেন।