সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নতুন বোতলে পুরনো মদ?
সদ্য বিদায়ী সিইসি কেএম নুরুল হুদা ও দায়িত্ব নিয়ে বিএনপিকে কাছে টানার চেষ্টা করেছেন।সেজন্য তিনি প্রয়াত জিয়াউর রহমান কে স্বাধীনতার ঘোষক বলতে ও কোন কার্পণ্য করেননি! অথচ ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট আগের রাতেই সম্পন্ন করেছেন।নব নিযুক্ত সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল ও পূর্বসূরির মতোই একটু সুকৌশলে এগুতে চাইছেন বলে মনে হচ্ছে।আর সে কারনেই তিনি শুরুতেই মন্তব্য করেছেন তিনি ও নাকি ইভিএম ভাল করে বুঝেন না!এটি চরম হাস্যকর একটি মন্তব্য বলে মনে হচ্ছে।কেএম নুরুল হুদা ৯৬ সালে জনতার মঞ্চ করে নিজের পরীক্ষা দিয়েছেন আর হাবিবুল আউয়াল তো কয়েকবারই পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন।কাজী হাবিবুল আউয়াল কে আইন সচিব নিয়োগ তো সুপ্রিম কোট অবৈধ ঘোষনা করেছিল?তারপরে ও কতোটা উত্তীর্ণ ও কতোটা কৃতদাসের মতো মনে হলে তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যন্ত করেছে বর্তমান সরকার।
নির্বাচন কমিশন গঠনের তোড়জোড় শুরু হওয়ার পর থেকেই আলোচনার শীর্ষে ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই সিনিয়র সচিব। বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের এই কর্মকর্তা কর্মজীবন শুরু করেন জেলা মুনসেফ (সহকারী জজ) হিসেবে। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সততা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করেন। সিইসির দায়িত্ব পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল সবশেষ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন।
হাবিবুল আউয়াল আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে সুপারনিউমারারি (স্বল্প সময়ের জন্য) সচিব ছিলেন। সেখান থেকে তাকে রাষ্ট্রপতির ১০ শতাংশ কোটায় প্রথমে ধর্মসচিব এবং পরে প্রতিরক্ষাসচিব হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ২০১৪ সালের ১৮ জুন তার চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়ায় সরকার
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়ার কথা ছিল হাবিবুল আউয়ালের। কিন্তু ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি পিআরএল বাতিল করে তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে এক বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেয় সরকার। পরে সেই চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়। ২০১৭ সালে অবসরে যান তিনি।
হাবিবুল আউয়ালের পৈত্রিক ভিটা চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দীপে হলেও তার পিতার চাকরি সূত্রে তার জন্ম কুমিল্লায়। হাবিবুল আউয়ালের পিতা কাজী আবদুল আউয়াল কারা বিভাগের কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসে জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার বাদী ছিলেন তৎকালীন কারা উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) আবদুল আউয়াল।
আমরা যতই দক্ষ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলি তাতে কোন কাজই হবেনা যদি না তৎ সময়ের সরকার নির্বাচন ব্যবস্থায় কোন রুপ হস্তক্ষেপ না করে।দেশে গত দুটি জাতিয় নির্বাচন ১৪ সালে তো ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ জন বিনাপ্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হয়েছেন আর ১৮ সালে তো দিনের ভোট আগের রাতেই সম্পন্ন হয়ে গেছে যা রাশেদ খান নেনন পর্যন্ত অকপটে স্বীকারও করেছেন। নির্বাচন দুটিতে যা দেখা গেছে তাতে এটা মনে করার জোন কারন নেই যে শেখ হাসিনার অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব?মন এবং ইচ্ছার পরিবর্তন ছাড়া কোন কিছুরই পরিবর্তন সম্ভব নয়।এক এগারোর সরকার চেয়েছে বলেই ২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্ব নির্বাচন কমিশন দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পেরেছে। মিলিয়ন ডলারের কোয়েশ্চন হলো শেখ হাসিনা কি আদৌ চাইবে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক যদি তাতে সরকারের কোন পরিবর্তন হয়ে যায়?