সাভারে টিকা কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়
প্রথম ডোজের টিকা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার টিকা কেন্দ্রে মানুষের ঢল নেমেছিল। সোমবার সকাল থেকে অসংখ্য নারী ও পুরুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে অনেকেই টিকা না পেয়ে ফিরে গেছেন।
তবে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ডোজ টিকাদান বন্ধের জন্য বলা হলেও কাল থেকে আরও পাঁচদিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, আজ সকাল ছয়টার পৌর শহরের আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ টিকা নিতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার টিকা কেন্দ্রে প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন। কেন্দ্রের বাইরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাদাগাদি করে টিকাপ্রত্যাশীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে নারীদের সাভার অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে থেকে পুরুষদের সারি পূর্বদিকে সাভার মুক্তির পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।
সকাল থেকে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে টিকা পাননি। টিকা নিতে আসা নারী ও পুরুষদের একটি বড় অংশ স্থানীয় সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানায় কাজ করেন বলে জানা গেছে।
তারা বলেন, টিকা নেওয়ার জন্য প্রতিদিন কারখানা থেকে ছুটি নেওয়া সম্ভব নয়। কারখানার মালিকরাও তাদের টিকা নেওয়ার জন্য ছুটি দিতে চান না।
পোশাককর্মী পারুল বেগম বলেন, ‘আজ টিকা নিতে আসব বলে কারখানায় অনুপস্থিত ছিলাম। টিকা তো নিতে পারলাম না, কালকে আবার কীভাবে আসব? এক দিন কাজ না করলে বেতন থেকে টাকা কেটে রাখে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা পাননি অনেক মানুষ।
গৃহিণী পলি আক্তার বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রথম ডোজ টিকাদান বন্ধ হয়ে যাবে বলে শুনেছেন তিনি। তাই বেশ সকালে টিকাকেন্দ্রে এসেছেন।
টিকাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ব্র্যাকের স্বাস্থ্য সহকারী বলেন, প্রতিদিন তাদের টিকাদানকেন্দ্রের মাধ্যমে ২৫ হাজার জনকে সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে অন্য দিনের তুলনায় আজ অনেক মানুষ ভিড় করেছিলেন। সবাইকে টিকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় অনেকেই ফেরত গেছেন।
জানতে চাইলে ঢাকার সিভিল সার্জন বলেন, প্রতিদিন কেন্দ্র থেকে ৪ বুথে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম ডোজ টিকা প্রদান বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এমন খবরে হঠাৎ মানুষের চাপ বেডেছে। তবে সরকার এখনো প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া বন্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আজ যারা টিকা না পেয়ে ফেরত গেছেন, তারা কাল কেন্দ্রে এলে টিকা নিতে পারবেন বলে জানান তিনি।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, হাজার হাজার টিকা-প্রত্যাশীর উপচে পড়া ভিড়। সাভারে আরও টিকা কেন্দ্র রয়েছে। জনস্রোতের কথা বিবেচনা করে বাড়ানো হয়েছে টিকা কেন্দ্র। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, ২৮ ফেব্রুয়ারির পরও আমাদের এখানে টিকা নেওয়া যাবে ৫ মার্চ পযর্ন্ত। হতাশ হওয়ার কিছু নাই।