সেই বাবা ছেলে পায়ে হেঁটে এখন লালমনিরহাটে
পায়ে হেঁটে ভ্রমণে আলোচিত সেই বাবা সাবেক সেনা কর্মকর্তা ছাদেক আলী সরদার (৬৬) ও তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৬) । তারা দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে দেশের অন্যান্য জেলায় হেঁটে ঘুরছেন । এই বাবা ও ছেলে আজ হেঁটে পৌঁছাছেন লালমনিরহাট। এনিয়ে মোট ১ হাজার ৬৪ কিলোমিটার হেঁটেই ভ্রমণ করলেন তারা।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫ টায় গাইবান্ধা শহর থেকে বাবা-ছেলে রওনা হয়ে। ৯০ কিলোমিটার হেঁটে রাত ১১ টায় লালমনিরহাটে পৌঁছে তারা। সেখানে পৌঁছামাত্র গণমাধ্যম কর্মীসহ স্থানীয় উৎসুক জনতা তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে ভির জমায়। এছাড়াও দীর্ঘ সড়কের বিভিন্ন স্থানে আরও অনেকে ক্যামরোবন্দী হয় এই বাবা ছেলের সঙ্গে।
এই ভ্রমণ পিপাসুদের বাড়ি গাইবান্ধা শহরের মধ্য গোবিন্দপুরে। ছাদেক আলী সরদার গত ২০০৬ সালে সেনা বাহিনীর অনারারী ক্যাপ্টেন পদে অবসর নিয়েছেন। ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান একজন উদ্যাক্তা। তাদের শরীর চর্চার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান হেঁটেই ঘুরে দেখার স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। এরই মধ্যে শুরু করেছে তাদের স্বপ্নযাত্রা। ইতোমধ্যে তারা পর্যাক্রমে ১ হাজার ৮৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দিয়েছে।
এর আগে দিনাজপুরের হিলি গিয়েছিলেন তারা।গাইবান্ধা থেকে পায়ে গাইবান্ধা ছাদেক চত্বর থেকে ফুলছড়ি থানা চত্বর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে যাত্রা শুরু করে তারা। ধারাবাহিকতায় গাইবান্ধার জেলা বিভিন্ন ইতিহাস-ঐতিহ্য ও দর্শণীয় স্থান সমূহ হেঁটে পদার্পন করেছে। এ ধারা অব্যাহত রেখে গাইবান্ধা থেকে বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটসহ আজ হিলিতে মোট ৩৩টি স্থানে ৮৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দিয়েছিলেন ওই বাবা-ছেলে।
ইতোমধ্যে বিশেষ স্থানে অবস্থিত হযরত শাহ সুলতানের মাজার, হযরত শাহ জামাল (র:) এর মাজার, রাজবাড়ি, জমিদার বাড়ি, গায়েবী মসজিদ, শাহী আমলের সুরা মসজিদ, যাদুঘর, নৌঘাট, সেতু, স্থলবন্দর, হাট-বাজারসহ আরও বেশ কিছু আলোচিত ও দর্শণীয় জায়গাগুলোতে হেঁটে চলেছে তারা। এভাবে আরও বেশ কিছু স্থানে দীর্ঘ পথ হেঁটে যাত্রা করবেন বলে জানিয়েছে ওই ভ্রমণ পিপাসু পিতা পুত্র। তবে বাবা-ছেলের ভিশণ কি, সে বিষয়ে মন্তব্য দিতে নারাজ তারা।
ভ্রমণ সঙ্গী মোস্তাফিজুর রহমান জাগো বলেন, বাবা-ছেলের মধ্যে যদি সু-সম্পর্ক বজায় থাকে এবং তা যদি বন্ধুসুলভ হয়, তাহলে হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যায় অবলিলায়। কিন্তু যদি সেই সম্পর্কের অবনতী ঘটে তাহলে এক কিলোমিটার তো দুরের কথা, একই ছাদের নিচে থাকাটাই দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। তাই বাবা-ছেলের মধ্যে সু-সম্পর্ক থাকার পাশাপাশি তা বন্ধুসুলভ হওয়াটাও একান্ত প্রয়োজন। এজন্য আমার বাবার হেঁটে চলার ভ্রমণে সঙ্গী হয়েছি।
সেনা বাহিনীর অনারারী ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) ভ্রমণকারী ছাদেক আলী সরদার জানান, হেঁটে যাত্রা করবেন, এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল তার। সেটি বাস্তবায়নে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া শুরু করেছেন।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আরো বলেন, আমাদের একটি মহৎ একটি ভিশন আছে। কিছু প্র্যাকটিস প্রয়োজন আছে তাই তাই একের পর এক ৩৬ তম মিশন পূরণ করলাম।
তারা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পর্যন্ত যাবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।