Azizur Rahman babu - (Shariatpur)
প্রকাশ ২২/০২/২০২২ ০৫:১৯পি এম

প্রাণহীন অমর একুশে ফেব্রুয়ারি !

প্রাণহীন অমর একুশে ফেব্রুয়ারি !
অমর একুশের সংস্কৃতি অনেকাংশে বদলে গেছে। যারা সরেজমিনে অবলোকন করেছেন তারা উত্তরটা সহজেই পেয়ে যাবেন।

আগে একুশের উদ্দীপনা ২/৩ দিন আগে থেকেঔ উপলব্ধি করতাম । আর এখন একুশের কোন প্রাণ নেই । নেই আগের চেতনাবোধ। সব যেনো পানশে হয়ে যাচ্ছে।

এ প্রজন্মের শিশুরা যখন গুরুগম্ভীর প্রশ্ন করে - সাবলিল উত্তর দেয়াটা মুশকিল হয়ে পড়ে। একটু চুপ থাকলে তাদের তর সয়না। তাঁরা সরাসরি গুগুল সাহেবের স্মরণাপন্ন হন এবং ঘেটেঘুটে একাধিক উত্তর পেয়ে যান । বেশী কথা খরচ করতে হয় না। একদিক থেকে নিজকে সংযত রাখা হয় আবার অমর একুশ সম্বন্ধে তাদের দৃষ্টিভংগী জানা যায়। বাস্তবতায়, অমর একুশের প্রকৃত উদ্দেশ্য লক্ষ্য কী ছিলো ? জানতে আগ্রহী হলেও সঠিক চর্চার কারণে এবিষয়ে বিস্তারিত ধারণা নিতে পারেনা। না পারে স্কুলে না কলেজে।

শহীদ মিনারকে আগে পবিত্র স্হান মনে করা হতো। ওখানে উপস্থিত থাকলে নিজের অস্তিত্ব বিষয়ে একটু হলে ভাব আসতো - আমরা জাতিগত ভাবে বাংগালী। এখন তা আর মনে হয় না। সত্যিকার অর্থে মনে প্রাণে কোন ভক্তি শ্রদ্ধা জাগেনা। ফুল আর গেটাপে যেনো সময় কেটে যায়। কে কোন সেজেগুজে এসছে। কে কার বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ভংগিমা করছে কার গার্লফ্রেন্ড কোন ষ্টাইলো আসলো সে আলোচনাই চলতে থাকে সারাদিন।

সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে উপলব্ধি করলাম - আগে প্রাইমারী স্কুল কলেজে এইদিনে একটা প্রোগ্রাম থাকতোই। শিক্ষক শিক্ষিকারা নিজ উদ্যোগে আলোচনা অনুষ্ঠান করতেন। ভাষা শহীদের জীবনী নিয়ে আলোচনা,বক্তৃতা, কবিতা আবৃত্তি, ছবি আকার প্রতিযোগিতা চলতো। পাড়ায় পাড়ায়,হাট বাজারে পতাকা অর্ধনিমিত থাকতো। বাড়ি থেকে খালি পায়ে বের হতো। সাদা পাঞ্জাবি, বুকে কালো কাপড়ের শোক দিবসের চিন্হ গাঁথা থাকতো আর এখন জুতা পরেই ফিটফাট বাবু সেজে বের হন। সন্ধ্যা হলেই যেনো একুশের চেতনার ডিজিটাল মানুষগুলো - হাসিমুখে বিদেয় দিয়ে নিজকে দেশপ্রেমী মনে করেন। দেশের উত্তরাধিকার মনে করেন।

একুশের চেতনা রাত দশটায় খালি গায়ে কাঁপতে থাকে - ঠোঁট বিড়বিড়িয়ে অস্পষ্ট করে বলতে থাকে " শহীদ মিনারের ফুলগুলি বেচতে পারলে - দুগা ভাত খাইতে পারতাম "।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ