ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার দাবীতে সাঁওতালদের মানববন্ধন
সাঁওতালসহ প্রায় ৪৫টির মতো আদিবাসী সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর ২০ লাখের বেশি শিশু ভূলতে বসেছে তাদের নিজস্ব ভাষাগত ঐতিহ্য। ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে সাঁওতালরা। গাাইবান্ধায় জনউদ্যোগ ও অবলম্বনের আয়োজনে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি ডি.বি. রোড, গানাসাস মার্কেটের সামনে জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবতীর্র সভাপতিত্বে এ কর্মসূচি পালিত হয়। শতাধিক নারী পুরুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে মানববন্ধন ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য প্রবীন রাজনীতিক আমিনুল ইসলাম গোলাপ, পরিবেশ আন্দোলন—গাইবান্ধা জেলা আহবায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, জেলা বারের সধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহবায়ক এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা বাবুল রবিদাস, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, মার্কসবাদী ওয়াকার্র্স পার্টির নেতা মৃনাল কান্তি বর্মন, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোর্শেদ দীপন, জেলা রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস, আদিবাসী নেত্রী তৃষ্ণা মুমুর্, বৃটিশ সরেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও বাংলাদেশে আদিবাসীদের নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে। বর্তমানে দেশের ৪৫টির মতো আদিবাসী গোষ্ঠীর ২০ লাখেরও বেশি শিশু বংশপরম্পরায় ভুলতে বসেছে তাদের নিজস্ব ভাষাগত ঐতিহ্য, লোকগাথা, প্রবাদ—প্রবচন ইত্যাদি। আদিবাসী শিশুদের নিজ মাতৃভাষায় অক্ষরজ্ঞান না থাকায় তাদের সংস্কৃতিও হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত। একটি শিশুর স্বকীয়তা, সৃজনশীলতা, মননশীলতা ও মেধার বিকাশ হয় তার মাতৃভাষার মধ্য দিয়ে। তাই আদিবাসী শিশুদের এ দেশে সাধারণভাবে শিক্ষা—দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা হতদরিদ্র আদিবাসী গোষ্ঠীর প্রত্যেকেরই নিজস্ব ভাষা ও নিজ ভাষার বর্ণলিপি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু চর্চার অভাবে এসব বর্ণমালার সবই এখন বিলুপ্তপ্রায়। ফলে নতুন প্রজন্মের আদিবাসীরা নিজ ভাষায় কথা বলতে পারলেও নিজস্ব ভাষায় তারা একেবারে নিরক্ষর।
বক্তরা আরো বলেন, গাইবান্ধাসহ আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অবিলম্বে আদিবাসীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক, গাইবান্ধা জেলায় আদিবাসী কালচারাল একাডেমি প্রতিষ্ঠাসহ তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ নেয়ার দাবী জানান।